যশোরের ঝিকরগাছায় এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক্ত জসীম (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলের ছদ্মবেশ ধারণ করেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। এক নারী, তার মা ও ছোট ভাইয়ের ওপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর থেকেই আসামি পলাতক ছিলেন।
মামলা সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারীর প্রায় ছয় বছর আগে নাভারণ এলাকায় বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের কারণে প্রায় আট মাস আগে তিনি স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে চার বছরের শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। জসীম, যিনি একজন দিনমজুর হিসেবে পেঁপে বাগানে কাজ করতেন এবং ভুক্তভোগী প্রতিবেশীর আত্মীয়। সেখান থেকেই গড়ে ওঠে একতরফা প্রেম। এর কিছু দিন পরে জসীম ওই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন, কিন্তু তার পরিবার তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলে, ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩ জুলাই রাতে, পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়ির বাইরে থাকার সুযোগে, ঘরের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় এসিড ছুড়ে মারেন ভুক্তভোগীর ওপর। এতে নারী, তার মা ও আট বছর বয়সী ছোট ভাই দগ্ধ হন। চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ ছুটে এলে জসীম পালিয়ে যায়।
আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা ঝিকরগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনা অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর হওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৫ জুলাই পুলিশের একটি টিম জানতে পারে, আসামি নড়াইল জেলার লোহাগাড়া থানাধীন আমাদাহ নামক স্থানে অবস্থান করছে। পুলিশ অভিযানে গেলে দেখা যায়, সে অবস্থান বদলে এক পর্যায়ে কামাল প্রতাপ নামক বিশাল বিলের মাঝে আশ্রয় নিয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, সেখানেই সে খাওয়া-দাওয়া সহ সমস্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল এবং মাঝে মধ্যে বিল থেকে বাইরে আসছিল।
পরিস্থিতি বুঝে এসআই তাপসের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল জেলের ছদ্মবেশ ধারণ করে বিলের মাঝে পৌঁছায়। পুলিশ দেখে জসীম পানিতে ঝাঁপ দিলে এসআই তাপসও পানিতে ঝাঁপ দিয়ে অভিযুক্তকে আটক করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসীম ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আসামিকে আদালতে সোপর্দ করার কাজ চলছে।
খুলনা গেজেট/এএজে